ভৌগলিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে বিশ্বের মানুষের খাদ্য-রুচি ভিন্ন ভিন্ন। প্রথমে আমরা সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারদাবার সম্বন্ধে জানা ও বিতর্কের ঊর্ধ্বের তথ্যগুলি একবার খতিয়ে দেখব। এইখানে মানব শরীরের ইনসুলিন নামে এক উৎসেচক (হরমোন) প্রস্তুতকারী অগ্নাশয়ের (প্যাংক্রিয়াস) বিটা কোষের প্রসঙ্গ এসে পড়ে। আমাদের খাবারের প্রধান অংশ হল শর্করা, যেটা কিনা পেট থেকে রক্তে ঢোকার সময়ে গ্লুকোজে পরিণত হয়েই তবে ঢুকতে পায়। রক্তে গ্লুকোজের ঊর্ধ্ব-মাত্রা নিয়ন্ত্রণের করে স্বাস্থ্যকর সীমার নীচে রাখার জন্য ইনসুলিনের ডাক পড়ে। খাবারে বেশি শর্করার থাকলে আনুপাতিক হারে বেশি করে ইনসুলিন তৈরি করতে হয় অগ্নাশয়কে। এই ব্যাপারটা ক্রমাগত হতে থাকলে অগ্নাশয়ের ইনসুলিন প্রস্তুতকারী বিটা কোষের মান ও পরিমাণ কমতে থাকে। অগ্নাশয়ের বিটা-কোষের কর্মক্ষমতা কমে গেলে পরবর্তীকালে ইনসুলিন যোগানে ঘাটতি পড়ে। প্রসঙ্গত মনে করে নেওয়া যাক, রক্তের গ্লুকোজ ব্যবহার করার গ্লুকোজকে শরীরের কোষে ঢুকতে হয় আর এই কাজের জন্য ইনসুলিন উৎসেচকের দরকার। একদিকে ইনসুলিনের যোগান কমে যাওয়া আর একই সঙ্গে গায়ে গতরে মোটা হয়ে যাওয়ার ফলশ্রুতি হিসাবে শরীরের বিভিন্ন কোষে ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা কমে যাওয়ায় দ্বিমুখী আক্রমণে শুরু হয়ে যায় পরস্পর সম্পর্কযুক্ত নিরাময়ের অযোগ্য ক্রনিক রোগসমূহ। এমনটাই বেশি দেখা যায়, গ্লুকোজ আর ইনসুলিন কোষের বাইরে যথেষ্টই আছে, কেবল কোষের ইনসুলিন-সংবেদনশীলতা কমে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট গ্লুকোজ কোষের মধ্যে ঢুকতে পারে না।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার – ডাঃ গৌতম মিস্ত্রি