মোবাইল অ্যাপে কী আদৌ প্রেসার-সুগার মাপা যায়?
করোনা কালে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক বেড়েছে বহুগুণ। এই পরিস্থিতিতে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা, ব্লাড প্রেসার বা সুগার মাপতে অনেকেই বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করছেন। কিন্তু এটা কী সত্যিই গ্রহনযোগ্য উপায়? এই ধরণের মোবাইল অ্যাপ কী এই পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর? এই প্রশ্নগুলি এখন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞ থেকে চিকিৎসক মহল কিন্তু এই পদ্ধতি একেবারেই নাকচ করে দিচ্ছেন। উল্টে তাঁদের দাবি, যারা প্রথাগত পদ্ধতিতে এই ধরণের পরীক্ষার খরচ বাঁচানোর জন্য মোবাইল অ্যাপেই ভরসা রাখছেন, তাঁদের বিপদ বাড়বে বই কমবে না। সম্প্রতি বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে সোশাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু হয়েছে। পাশাপাশি শীঘ্রই মাইকে করেও প্রচার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিধাননগরের পুলিশ কর্তারা। পুলিশের বক্তব্য, এই ধরণের অ্যাপ আসলে ফাঁদ। বেশ কয়েকদিন ধরেই সাইবার শাখায় নানান অভিযোগ জমা পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ব্লাড সুগার, ব্লাড প্রেসার বা অক্সিজেনের মাত্রা মাপার জন্য অ্যাপ ব্যবহারের জন্য মোবাইল ফোনে হাতের স্পর্শ জরুরী। আর এখানেই পাতা রয়েছে ফাঁদ। আর স্মার্ট ফোনে হাতের স্পর্শ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইলের যাবতীয় ডেটা চুরি করে নিচ্ছেন প্রতারকরা। সাইবার ক্রাইমের এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, এই ধরণের অ্যাপ চালুর আগে ফোনের লোকেশন ও গ্যালারি অ্যাক্সেস করার অনুমতি চাওয়া হয়ে থাকে। আর এই অনুমতি (Allow) দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতারকরা সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এরপর ব্লাড সুগার, ব্লাড প্রেসার বা অক্সিজেনের মাত্রা মাপার জন্য মোবাইলের নির্দিষ্ট জায়গায় হাতের আঙ্গুলের স্পর্শ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যক্তিগত ডেটা হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতারকরা। এরপর ‘ব্ল্যাকমেল’ করে টাকা চাওয়া হচ্ছে। এছাড়া এখন অনেকের মোবাইল ফোনেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য থাকে। ফলে ব্যাঙ্ক অ্যাউন্টের তথ্যও হাতিয়ে নেওয়া অসম্ভব নয়। অপরদিকে চিকিৎসকরাও জানাচ্ছেন, এভাবে মোবাইল অ্যাপে কখনই শরীরে ব্লাড সুগার, ব্লাড প্রেসার বা অক্সিজেনের মাত্রা জানা সম্ভব নয়। কারণ ভার্চুয়ালি এই ধরণের শারীরবৃত্তিয় সমস্যা জানা যায়না। এরজন্য হয় ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা করা উচিৎ। অথবা এগুলি মাপার জন্য বাজারে বহু যন্ত্র পাওয়া যায়। যেগুলি দিয়ে সুগার, প্রেসার বা অক্সিজেনের মাত্রা মাপা সম্ভব। ফলে ভালো করে যাচাই না করে এই ধরণের মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করলে তার মাশুল গুনতে হবেই।